গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | Beef Vuna khichuri Recipe

25 Aug, 2023
গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি Beef Vuna khichuri Recipe
Rate this post

গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি ( Beef Vuna khichuri Recipe ) – বাঙালি ভোজনে আমরা বিভিন্ন ধরনের খিচুড়ি খেয়ে থাকি। কিন্তু গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি  রেসিপি এটি যেন একটি সুস্বাদু খাবারের মধ্যে অন্যতম। যেহেতু এটি গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি এখানে মাংস থাকা বিদ্যমান। গরু মাংস ব্যতীত গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি কল্পনাই করা যায় না। খিচুড়ির স্বাদ অতুলনীয় করে গড়ে তুলতে গরুর মাংসের অবদান অপরিসীম।

গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | Beef Vuna khichuri Recipe

গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি ( Beef Vuna khichuri Recipe ) তৈরি করার জন্য অত্যাবশ্যকীয় যে উপাদান সেটি হল পোলার চাল, মুগ ডাল ও মসুর ডাল।এ সকল উপকরণ ছাড়াও আরো বিভিন্ন ধরনের উপকরণ রয়েছে যেগুলো ছাড়া গরু মানুষের ভুনা খিচুড়ি রান্না করা অসম্ভব। নিম্নে সেগুলো আলোচনা করা হলো-

গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি এর উপকরণ:

  1. গরুর মাংস-
  2. পোলাওয়ের চাল
  3. মুগ ডাল
  4. মসুর ডাল
  5. লবণ
  6. মরিচ গুঁড়া
  7. হলুদ গুঁড়া
  8. ধনিয়া গুঁড়া
  9. জিরা গুঁড়া
  10. রসুন বাটা
  11. আদা বাটা
  12. দারুচিনি
  13. সবুজ এলাচ
  14. লবঙ্গ
  15. তেজপাতা
  16. পেঁয়াজ কুচি
  17. তেল
  18. ঘি
  19. কেওড়া জল

গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি এর উপকরণের পরিমান:

  1. গরুর মাংস- ২ কেজি (হাড়সহ ছোট করে টুকরা)
  2. পোলাওয়ের চাল- ২ কেজি
  3. মুগ ডাল- ১.৫ কাপ
  4. মসুর ডাল- ১.৫ কাপ
  5. লবণ- ১/২ টেবিল চামচ
  6. মরিচ গুঁড়া- ২ টেবিল চামচ
  7. হলুদ গুঁড়া- ২ টেবিল চামচ
  8. ধনিয়া গুঁড়া- ২ চা চামচ
  9. জিরা গুঁড়া- ২ চা চামচ
  10. রসুন বাটা- ৩ চা চামচ
  11. আদা বাটা- ২.৫ চা চামচ
  12. দারুচিনি- ৩ টুকরা
  13. সবুজ এলাচ- ৬টি
  14. লবঙ্গ- ৭টি
  15. তেজপাতা- ৩টি
  16. পেঁয়াজ কুচি- ২ কাপ
  17. তেল- ১.৫ কাপ
  18. ঘি- ৩ টেবিল চামচ
  19. কেওড়া জল- ২.৫ টেবিল চামচ
See also  পাতলা খিচুড়ি রান্নার রেসিপি | Patla Khichuri Recipe Bengali

গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি প্রস্তুত প্রণালি

  1. সর্বপ্রথম একটি পাএে গরুর মাংসগুলো ধুয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
  2. মাংসগুলোতে লবণ, হলুদ গুঁড়া, ধনিয়া গুঁড়া, জিরা গুঁড়া, মরিচ গুঁড়া, রসুন বাটা, আদা বাটা, দারুচিনি, লবঙ্গ, এলাচ, তেজপাতা, পেঁয়াজ কুচি ও তেল ভালোভাবে মেখে মিশ্রিত করতে হবে যেন কোন মাংস অমিশ্রিত থেকে না যায়। মাংসে কোন মসলা অমিশ্রিত রয়ে গেলে খিচুড়িতে ভালো স্বাদ আসবে না।
  3. এরপর চুলায় তেল গরম করে সকল ধরনের মসলা মিশ্রিত মাংসগুলোকে নাড়াচাড়া করতে হবে ও ঢেকে দিতে হবে।
  4. পাত্রের মাংসগুলোতে পানি দেয়ার কোন দরকার নেই ১০ থেকে ১৫ মিনিট এভাবে অপেক্ষা করতে হবে। কিছুক্ষণ পর মাংস থেকে পানি বেরিয়ে আসবে।
  5. ১০ মিনিট পর ঢাকনা তুলে মাংস কষিয়ে নিতে হবে এবং মাংসের পানি শুকিয়ে গেলে এক কাপ পানি দিতে হবে।
  6. আরো আধা ঘন্টার জন্য মাংসের প্যান ঢেকে দিতে হবে।এরপর মসুর ও মুগ ডালগুলো টেলে নিতে হবে এবং ডালগুলো ভেজে নিতে হবে। ভেজে নেওয়ার পর ডালগুলো পোলার চালের সাথে একসঙ্গে মিশিয়ে ভালো করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে।
  7. মাংসগুলো সিদ্ধ হয়ে এলে ধুয়ে রাখা চাল ও ডাল গুলো মাংসের উপর দিয়ে দিতে হবে। চুলার আঁচ মাঝারি করে ৬ থেকে ৭ মিনিট নাড়াচাড়া করতে হবে, ৬ থেকে ৭ মিনিট অপেক্ষা করার পর নয় কাপ পানি দিয়ে দিতে হবে।
  8. এরপর সুন্দর করে নেড়ে উচ্চ তাপে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে,৮ থেকে ১০ মিনিট যাবৎ রান্না করতে হবে।
  9. খিচুড়ির বলক চলে আসলে ঢাকনা তুলে কেওড়া জল দিয়ে নেড়েচেড়ে আবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।এরপর ২০ থেকে ২৫ মিনিটের মত একদম কম আঁচে রান্না করতে হবে।
  10. অবশেষে ৫ থেকে ৭ মিনিট দমে রেখে খিচুড়িটি সুন্দর পরিষ্কার পাত্রে পরিবেশন করতে হবে।
See also  খুব কম সময়ে ৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি

গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি খেতে কেমন এবং কখন কোন পরিবেশে খেতে হয়-

  1. গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি খেতে মজাদার,সুস্বাদু এবং অতুলনীয়।
  2. সাধারণত এই ভুনা খিচুড়ি বৃষ্টিস্নাত দিনগুলোতে খেতে খুব ভালো লাগতে পারে এমনকি শীতকালেও খাওয়া যেতে পারে।
  3. অতিথি আপ্যায়নে গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি সুস্বাদু আকার ধারণ করবে।

গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি খাওয়ার উপকারিতা-

  1. গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ির প্রধান উপকরণের মধ্যে  পোলাও চাল ও ডালের ব্যবহার রয়েছে।যার ফলে এই রেসিপিটি একই সঙ্গে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। ১০০ গ্রাম মসুর ডালে প্রায় ২৬ গ্রাম প্রোটিন রয়েছে। এমনকি, মসুর ডালে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ফাইবার রয়েছে। মসুর ডালে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণও বেশি।
  2. মুগ ডাল কোলেসিস্টোকাইনইন হরমোনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
  3. খাবারের সাদ নিয়ন্ত্রণে লবনের ভূমিকা অপরিসীম যা শরীরে লবণের ঘাটতি পূরণে সহায়তা করে।
  4. খাবারকে সুস্বাদু ও মজাদার করে তুলতে হলুদ গুঁড়া ও মরিচ গুঁড়ার বিকল্প নেই।রান্না করার সময় কেউ হলুদ-মরিচ বেটে ব্যবহার করে আবার কেউ গুড়ো হলুদ-মরিচও ব্যবহার করে থাকে।এতে রয়েছে নানান ধরনের পুষ্টিগুণ যা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত জরুরী।
  5. হলুদ মানবদেহে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। আমাদের দেহে বিভিন্ন কারণে যেসব ফ্রি র্যাডিক্যাল তৈরি হয়, সেগুলো নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এসব অনাহূত ফ্রি র্যাডিক্যাল নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে হলুদ বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সাহায্য করে। হলুদ গুড়া মানবদেহে নিউরোপ্রটেক্টিভ হিসেবেও কাজ করে।
  6. বাঙালির রন্ধন বিলাসে অন্যতম উপাদান মরিচ গুঁড়া, মরিচ গুড়া যেমন আমাদের খাদ্যে স্বাদ ও ঝাল এনে দেয় তেমনি রয়েছে এর বিশেষ পুষ্টি উপাদান।মরিচে আছে ক্যাপসাইসিন নামক একটি বায়ো-অ্যাকটিভ কম্পাউন্ড। যা লিভারে ও রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।রসুন আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় একটি বিশেষ উপাদান; এর মধ্যে আছে- থিয়ামিন (ভিটামিন বি১), রিবোফ্লাবিন (ভিটামিন বি২), নায়াসিন (ভিটামিন বি৩), প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি৫), ভিটামিন বি৬, ফোলেট (ভিটামিন বি৯) ও সেলেনিয়াম।
  7. আদার মধ্যে রয়েছে- পটাশিয়াম, আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি–ইনফ্লামেটরি এজেন্ট বিদ্যমান। যার ফলে সকল বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন।
See also  ভাতের চালের খিচুড়ি রেসিপি | vater chaler khichuri

সুতরাং বলা যায় এই খিচুড়ি খাওয়ার মাধ্যমে আমরা উক্ত পুষ্টি উপাদানের মাধ্যমে দৈহিক উপকারগুলো পেতে পারি।

গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি খাওয়ার অপকারিতা

বর্তমানে প্রতিটি ঘরে বিভিন্ন রোগের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। যেমন- হৃদরোগ, কিডনি রোগ, হাই প্রেসার সহ আরো অনেক কিছু। যার কারণে চিকিৎসকরা প্রতিটি রোগীর খাদ্য তালিকায় নিয়ন্ত্রণ করে দিচ্ছে এমনকি বিশেষ করে গরু মাংসকে নিষিদ্ধ করে দিচ্ছে।

গরুর মাংসের যেমন পুষ্টিউপাদান রয়েছে তেমনি এর ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি ( Beef Vuna khichuri Recipe ) এটি খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতাও রয়েছে।এমন কিছু রোগী আছেন যাদের গরুর মাংস খাওয়া একদমই নিষিদ্ধ সুতরাং তাদের গরুর মাংস খিচুড়ি খাওয়াও নিষিদ্ধ হতে পারে।অন্যান্য মাংসের তুলনায় গরুর মাংসের চর্বির পরিমাণ বেশি থাকে যার কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে।

যারা কিডনি রোগী রয়েছেন তাদের জন্য গরুর মাংস সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।সুতরাং বলা যায় ডায়াবেটিস ও কিডনি রোগীরা যদি গরুর মাংস হিসাব করে না খান বা অতিরিক্ত খেয়ে ফেলেন তাহলে নিশ্চিত যে দৈহিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।

এছাড়াও যারা হার্টের রোগী আছেন তাদের ক্ষেত্রেও গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি খাওয়ার জন্য বিশেষ বিধি নিষেধ মানতে হয় তা না হলে হার্টের সমস্যা বৃদ্ধি পেতে পারে।

এছাড়া যাদের গরুর মাংসের এলার্জি রয়েছে, পাইলসের সমস্যা রয়েছে তাদের গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি না খাওয়াটাই উত্তম। তা না হলে তাদের দেহে পাইলসের সমস্যা ও এলার্জিজনিত সমস্যা অতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পেতে পারে।

এছাড়াও যারা অতিরিক্ত ওজনের মানুষ তাদের গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি ( Beef Vuna khichuri Recipe ) পরিমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত তা না হলে তাদের ওজন অতিরিক্ত মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়ে রোগ বালাই বেড়ে যেতে পারে।

আর্টিকেলের শেষকথাঃ গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি ( Beef Vuna khichuri Recipe )

গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি ( Beef Vuna khichuri Recipe ) টি আশা করি ভালো লেগেছে। যদি ভালো লাগে এখনি বন্ধুদের সাথে শেয়ার করে দিন আর এই রকম গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি ( Beef Vuna khichuri Recipe ) নিত্য নতুন আর্টিকেল পেতে উইকিপ্রিয় ডট কম সাইট টি ভিজিট করুন।

Rk Raihan

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *