(অজানা তথ্য) জয়নুল আবেদিন সম্পর্কে ১০টি বাক্য জেনে নিই

28 Aug, 2023
(অজানা তথ্য) জয়নুল আবেদিন সম্পর্কে ১০টি বাক্য জেনে নিই
Rate this post

জয়নুল আবেদিন সম্পর্কে ১০টি বাক্য – শিল্পাচার্য জয়নাল আবেদীন হলো বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী। একজন চিত্রশিল্পী হিসেবে তার ব্যতিক্রমী অবদানের জন্য শিল্পের জগতে তিনি বহুল সমাদৃত।

শিল্পচর্য জয়নাল আবেদীনকে অনেকেই ১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষের ছবি আকার কারণে চিনে থাকেন। তিনি বাংলাদেশের ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের ছবি নিখুঁতভাবে অংকন করে ফুটে তুলেছিলেন।

শিল্পচর্য জয়নাল আবেদীন চিত্রশিল্প বিষয়ক শিক্ষার প্রসারের জন্য অমৃত প্রচেষ্টা করে গেছেন এবং যে কারণে তিনি শিল্পাচার্য উপাধি লাভ করেন। ‌ তার বিখ্যাত কিছু চিত্র কর্মের মধ্যে রয়েছে যেমন: ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের ছবি, মই দেওয়া, সাঁওতাল রমণী, কাক, বিদ্রোহী, সংগ্রাম ইত্যাদি। এছাড়াও ও তিনি 1970 সালে গ্রাম বাংলার উৎসব নিয়ে ৬৫ ফুট দীর্ঘ একটি নবান্নর ছবি অঙ্কন করেন। ‌

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সম্পর্কে কিছু কথা

জয়নুল আবেদিন ছিলেন এমন একজন আলোকিত ব্যক্তি, যিনি ১৯১৪ সালে ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহকুমার (বর্তমান যেটির নাম কিশোরগঞ্জ জেলা) জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ছিলেন একজন পুলিশের দারোগা বা সাব-ইন্সপেক্টর, আর তার মা ছিলেন একজন গৃহিণী।

পরিবারের নয় সন্তানের মধ্যে জয়নুল আবেদীন ছিলেন সবচেয়ে বড় এবং পরিবারের কাছেই তার পড়াশোনার প্রথম হাতেখড়ি শুরু হয়। খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন এবং যে পছন্দের কারণে তিনি চিত্রশিল্পের জগতে অবিস্মরণীয় ব্যক্তিত্ব হয়ে আছেন।

See also  ভালো মৃত্যুর ১৫ টি আলামত | ভালো মৃত্যুর কিছু আলামত

তার চিত্র শিল্পের প্রতিভার শুধুমাত্র বাংলাদেশের শিল্পের দৃশ্যই বদলে দেয়নি, বরং তার শিল্পের কারণে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে একটি নতুন স্থায়ী চিহ্ন রেখে গেছে। জয়নুল আবেদিন সম্পর্কে বলতে গেলে, তিনি বাংলাদেশের একজন প্রখ্যাত শিল্পী, শিক্ষাবিদ এবং একজন সামাজিক ব্যক্তিত্ব ছিলেন। আর তিনি বাংলাদেশের চিত্রশিল্পকে একটি নতুন রূপের সাথে পরিচয় করে দিয়েছেন। যে বিষয়টি তাকে বাংলাদেশের সম্মানিত মর্যাদার আসনে উন্নীত করেছে।

শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন সম্পর্কে ১০টি বাক্য

আমরা যদি শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন সম্পর্কে প্রশংসা করি কিংবা তার সম্পর্কে বলি, তাহলে চিত্রশিল্পের জগতের তার অনেক অবদানের কথা বলা যাবে। তিনি, বাংলাদেশের চিত্রশিল্প এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনের জন্য অনেক কিছু করে গিয়েছেন।

এখানে জয়নাল আবেদীন সম্পর্কে ১০ টি বাক্য রয়েছে। এগুলো হলো:

  1. জয়নুল আবেদীন ১৯১৪ সালে বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলায় জন্মগ্রহণ করেন।
  2. শিল্প শিক্ষার প্রসারে জয়নুল আবেদীনের উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা এবং ভূমিকার কারণে ঢাকা আর্ট কলেজ (বর্তমান চারুকলা অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) প্রতিষ্ঠায় তার ভূমিকার কারণে তাকে প্রায়ই বাংলাদেশী শিল্পের জনক বলা হয়।
  3. জয়নুল আবেদীনের সবচেয়ে আইকনিক কাজ হলো, ১৯৪৩ সালের দুর্ভিক্ষের ছবি। যে পেইন্টিং গুলো বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষের বীভৎস বাস্তবতাকে তুলে ধরেছে। আর এসব ছবির মাধ্যমে সে সময়ে দুর্দশা গ্রস্থ জনগণের প্রতি তার গভীর সহানুভূতি ও প্রদর্শন হয়।
  4. মানুষের বাস্তবিক অবস্থা চিত্রশিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার ক্ষমতা, তাকে সামাজিক সমস্যাগুলোর প্রতি গ্রহের সহানুভূতিশীল একজন শিল্পী হিসেবে বিবেচিত করে তোলে। ‌
  5. জয়নুল আবেদীন গ্রাম বাংলার মানুষের বাস্তবিক অবস্থা গুলোকে চিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলত।
  6. জল রং, তেল রং এবং বিভিন্ন মাধ্যমে তিনি তার শিল্পের দক্ষতা প্রদর্শন করেছে। আর এসব কারনে তার কাজ অনেক বৈচিত্র্যময় এবং যা তাকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে।
  7. জয়নুল আবেদীন তার শিল্পের দৃশ্যে একটি অদম্য চিহ্ন রেখে গেছে। ‌ভবিষ্যৎ শিল্পীরা বা ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তার শিল্প দেখে অনুপ্রাণিত হতে পারে।
  8. জয়নুল আবেদীন কর্মজীবনে পাকিস্তানের মর্যাদাপূর্ণ রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পুরস্কার, একুশে পদক, বাংলাদেশ চারু শিল্পী সংসদ পুরস্কার সহ আরো অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। আর এগুলোর সব পুরুষকারই তার শিল্প ও সাংস্কৃতিক বিষয়ে ব্যতিক্রমী অবদানের জন্য দেওয়া হয়েছে।
  9. জয়নুল আবেদীনের শিল্পকর্মগুলো বর্তমানে ময়মনসিংহের জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত আছে।
  10. বাংলাদেশের চিত্রশিল্পের আইকন হিসেবে তার স্থান দৃঢ় এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তার শিল্পকর্ম দেখে অনুপ্রাণিত হতে পারে।
See also  ১০টি সেরা উপায়ে ঘরে বসে আয় করুন

জয়নুল আবেদীনের দুর্ভিক্ষের ছবি

শিল্প জগতে জয়নুল আবেদীনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের একটি হল “দুর্ভিক্ষ সিরিজ”। ১৯৪৩ সালে বাংলাদেশে এক বিভৎস দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়। ‌ জয়নুল আবেদীন সে সময় বাংলাদেশের দুর্ভিক্ষকে পতিত মানুষদের বাস্তবিক অবস্থা চিত্রশিল্পের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলেন। ‌তার দুর্ভিক্ষ সিরিজের ছবিগুলোতে ছিল জনসাধারণের হতাশা, দুর্দশা এবং কষ্টের চিত্র।

দুর্ভিক্ষ সিরিজের ছবি অংকন এর মাধ্যমে জয়নাল আবেদীন শুধুমাত্র তার শৈল্পিক দক্ষতাই নয়,  বরং সামাজিক সমস্যাগুলোর জন্য ও তার সহানুভূতি এবং উদ্বেগ ফুটিয়ে তুলেছিলেন। দুর্ভিক্ষ সিরিজের ছবি গুলো তার জীবনের একটি টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ‌ আর একজন সামাজিক ও বিবেক সম্পূর্ণ শিল্পী হিসেবে এটি তার খ্যাতিকে আরো বাড়িয়ে তোলে।

জয়নুল আবেদীনের পরিচয় এবং ঐতিহ্য

জয়নুল আবেদিন বরাবরই বাংলাদেশের চিত্রশিল্পের অবদানের জন্য প্রশংসিত হন। আর তিনি এ কারণেই বাংলাদেশের ঐতিহ্যের জন্য এক গর্বের জায়গা। তিনি বাংলাদেশের গ্রামীণ জীবন, ঐতিহ্যবাহী কারু শিল্প এবং মানুষদের বাস্তবিক অবস্থার চিত্র অংকন এর মাধ্যমে এদেশের ঐতিহ্য ও বাস্তবিক অবস্থাকে ফুটিয়ে তুলেছিলেন।

তার দৈনন্দিন জীবনের চিত্র কর্মগুলো বাংলাদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সারমর্ম তুলে ধরে এবং যা দেশের ঐতিহ্যকে ও বহন করে।

জয়লুল আবেদীনের স্বীকৃতি সমূহ

জয়নুল আবেদিন তার ব্যতিক্রমী অবদানের জন্য জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তিনি বাংলাদেশের একুশের পদক, বাংলাদেশ চারু শিল্পী সংসদ পুরস্কার এবং পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট পুরস্কার সহ অসংখ্য পুরস্কার লাভ করেন। আর তার এসব পুরস্কারের সংগ্রহশালা বর্তমানে ময়মনসিংহ জেলায় জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালায় সংরক্ষিত আছে। যেখানে দর্শনার্থীরা তার আঁকা অনেক চিত্রশিল্প দেখতে পারেন। ‌

See also  মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১০টি বিশেষ উদ্যোগ সমূহ

জয়নুল আবেদীন সম্পর্কে জানার জন্য এবং তার শিল্পকর্ম দেখার জন্য যেকোনো ব্যক্তি চাইলে জয়নুল আবেদীন সংগ্রহশালায় পরিদর্শন করে অনুপ্রাণিত হতে পারেন। ‌

জয়নুল আবেদিনের কাছ থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যা পেতে পারে

বাংলাদেশে জয়নাল আবেদীন তার জীবদ্দশায় শৈল্পিক দক্ষতায় ক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছিলেন। ‌ তার উদ্ভাবনী দৃষ্টিভঙ্গি, সামাজিক সমস্যাগুলোর প্রতি দৃষ্টি এবং বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী শিল্পের প্রচারে তার কাজ অবিস্মরণীয়। তার এই কাজগুলো থেকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিল্পীরা অনুপ্রেরণা নিতে পারে। তিনি তার প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ এবং বাংলাদেশের মানুষের জন্য যেমনটি করেছেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চিত্রশিল্পীরা ও তাদের প্রতিভাকে এসব কাজে ব্যয় করতে পারে।

এক্ষেত্রে তারা সমাজের বিভিন্ন বাস্তবতা এবং গুরুত্বপূর্ণ বার্তাগুলোকে শিল্পের মাধ্যমে মানুষের কাছে তুলে ধরতে পারে, যা দ্বারা সমাজ এবং রাষ্ট্র উপকৃত হবে। শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীন তার কাজের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে যুগ যুগ ধরে বেঁচে থাকবে।

জয়নুল আবেদিন সম্পর্কে ১০টি বাক্য সম্পর্কে শেষ কথা

একজন চিত্রশিল্পী হিসেবে জয়নুল আবেদীন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে অনুপ্রেরণায় নাম। সামাজিক দায়বদ্ধতা, আধুনিক শিল্প শিক্ষার প্রসার এবং সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তার ভূমিকার কারণে তিনি সবসময় শিল্প-প্রেমী মানুষের মনে থাকবেন। আর জয়নুল আবেদন সম্পর্কে বলতে গেলে, তিনি ছিলেন একজন দূরদর্শী শিল্পী, যা তাকে সংস্কৃতিক আইকন হিসেবে মানুষের মনে স্থান দিয়েছে।

তিনি বাংলাদেশের চিত্রশিল্পে একটি স্থায়ী প্রভাব রেখে গেছেন, যা শিল্পী এবং শিল্প উৎসাহী মানুষদের সবসময় অনুপ্রাণিত করবে।

Rk Raihan

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *