
CHO+6026CO2+ 6H2O+ E.
ক. সালোকসংশ্লেষণ কী?
খ. জৈব মুদ্রা বলতে কী বোঝ? ব্যাখ্যা করো।
গ. কোষীয় ক্ষুদ্রাঙ্গে উৎপাদনের চক্রাকার ধাপটি বর্ণনা করো।
ঘ. উদ্দীপকের প্রক্রিয়াটি পরোক্ষভাবে সৌরশক্তির উপর নির্ভরশীল- বিশ্লেষণ করো।
প্রশ্নের উত্তর
ক. সবুজ উদ্ভিদের সূর্যালোকের উপস্থিতিতে ক্লোরোফিলের সাহায্যে CO, ও পানির রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে শর্করা তৈরির প্রক্রিয়াই হলো সালোকসংশ্লেষণ ।
খ. জীবন পরিচালনার জন্য জীবকোষে তথা জীবদেহে প্রতিনিয়ত হাজারো রকমের জৈবরাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে।
কিছু শক্তিসমৃদ্ধ যৌগ উচ্চশক্তি ধারণ করে এবং প্রয়োজনে এসব বিক্রিয়ায় শক্তি যোগায় যেমন-ATP, GTP, NAD, NADP, FADH, ইত্যাদি।
এদের মধ্যে ATP শক্তি জমা রাখে এবং প্রয়োজন অনুসারে অন্য বিক্রিয়ায় শক্তি সরবরাহ করে। এজন্য ATP কে জৈব মুদ্রা বলা হয়।
জৈব মুদ্রা বলতে কি বুঝ
গ. উদ্দীপকে রাসায়নিক সমীকরণটি দ্বারা সবাত শ্বসনকে বোঝানো হয়েছে। সবাত শ্বসনে বিপুল পরিমাণ শক্তি তথা ATP তৈরি হয়। এখানে E দ্বারা ঐ শক্তি বা ATP-কে বোঝানো হয়েছে। শ্বসন ক্রিয়ায় শক্তি উৎপাদনের চক্রাকার ধাপটি হলো ক্রেবস চক্র।
এটি কোষের মাইটোকন্ড্রিয়াতে সম্পন্ন হয়। নিচে ক্রেবস চক্র বর্ণনা করা হলো- এ ধাপের শুরুতে অ্যাসিটাইল Co-A মাইটোকন্ড্রিয়নে প্রবেশ করে। পরে এই অ্যাসিটাইল Co-A সেখানে অবস্থিত অক্সালো এসিটিক এসিডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে সাইট্রিক এসিড তৈরি হয়। পরবর্তী ধাপসমূহে এ সাইট্রিক এসিড বিভিন্ন ধরনের এসিডে পরিণত হয়।
যেমন– আইসোসাইট্রিক এসিড, ৫-কিটোপ্লুটারিক এসিড, সাকসিনিক এসিড, ফিউমারিক এসিড, ম্যালিক এসিড ইত্যাদি। এক্ষেত্রে প্রতিটি ধাপে ভিন্ন ভিন্ন এনজাইম ক্রিয়া করে থাকে। এই ধাপগুলো সম্পন্ন হওয়ার সময় এক অণু অ্যাসিটাইল Co-A থেকে ৩ অণু NADH2, ১ অণু FADH এবং ১ অণু GTP তৈরি হয়। ক্রেবস চক্রে দুই অণু অ্যাসিটাইল Co-A অংশগ্রহণ করে। এই দুই অণু অ্যাসিটাইল Co-A থেকে ৬ অণু NADH2, 2 অণু FADH, এবং ২ অণু GTP তৈরি হয়ে থাকে,
যা প্রকৃতপক্ষে সর্বমোট ২৪ অণু ATP-র সমান। সর্বশেষ ধাপে উৎপন্ন ম্যালিক এসিড দু’টি হাইড্রোজেন হারিয়ে পুনরায় অক্সালো এসিটিক এসিডে পরিণত হয় এবং অ্যাসিটাইল Co-A-র সাথে মিলিত হয়ে চক্রটিকে চালু রাখে ।
ঘ. উদ্দীপকের রাসায়নিক বিক্রিয়া দ্বারা সবাত শ্বসনকে বোঝানো হয়েছে। এই সবাত শ্বসনের শ্বসনিক বস্তু হলো গ্লুকোজ। গ্লুকোজ On এর উপস্থিতিতে সম্পূর্ণরূপে জারিত হয়ে CO2, পানি এবং ATP তথা শক্তি (E) উৎপন্ন করে। সবাত শ্বসন চারটি ধাপের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়ে থাকে। যথা- গ্লাইকোলাইসিস, অ্যাসিটাইল Co-A সৃষ্টি, ক্রেবস চক্র এবং ইলেকট্রন প্রবাহতন্ত্র।
সবাত শ্বসনের উল্লিখিত ধাপগুলো তখনই সঠিকভাবে সম্পন্ন হবে যখন শ্বসনিক বস্তু গ্লুকোজ ঠিকভাবে তৈরি হবে। গ্লুকোজ তৈরি না হলে উদ্দীপকের প্রক্রিয়াটি অর্থাৎ সবাত শ্বসন সম্ভব নয়। আবার উদ্ভিদ কেবলমাত্র সৌরশক্তির উপস্থিতিতেই CO, ও পানির রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়ায় গ্লুকোজ তৈরি করতে পারে। সালোকসংশ্লেষণের সময় সৌরশক্তি গ্লুকোজের মধ্যে স্থৈতিক শক্তিরূপে
মাবদ্য থাকে যা শ্বসনের সময় তাপশক্তিরূপে উদ্ধৃত হয়ে রাসায়নিক পৰূিপে (ATP) মুক্ত এ আলোচনা থেকে বোঝা যায় যে, সৌরশক্তির অনুপস্থিতিতে গ্লুকোজ তৈরি সম্ভব নয়। আবার গ্লুকোজ তৈরি না হলে উদ্দীপকের সবাত শ্বস প্রক্রিয়াটিও অসম্ভব।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে, উদ্দীপকের প্রক্রিয়াটি অর্থাৎ পৰাত শ্বসন পরোক্ষভাবে সৌরশক্তির উপরই নির্ভরশীল।