ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | jorjore bhuna khichuri

27 Aug, 2023
ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি jorjore bhuna khichuri
5/5 - (9 votes)

ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি ( jorjore bhuna khichuri ) বৃষ্টির সাথে ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ির সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর।ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি ছাড়া বৃষ্টির দিন কল্পনাই করা যায় না এবং দিনটি মূল্যহীন। ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি এর কথা শুনলে বাঙালির যেন লোভ সামলানো অসম্ভব হয়ে যায়।

ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | jorjore bhuna khichuri

তাই বৃষ্টির ফোঁটা পড়তে না পড়তেই প্রতিটি ঘর থেকে ভেসে আসে ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ির লোভনীয়, সুস্বাদু ও সু-ঘ্রান।

চলুন এখন জেনে নেওয়া যাক ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি তৈরি করার বিশেষ কৌশল গুলো কি কি।

  1. রেসিপির উপকরন
  2. যেকোনো ডাল
  3. পোলাওয়ের চাল
  4. সয়াবিন তেল
  5. পেঁয়াজকুচি
  6. এলাচ
  7. লবঙ্গ
  8. তেজপাতা
  9. দারুচিনি
  10. রসুন বাটা
  11. আদা বাটা
  12. হলুদ গুঁড়া
  13. মরিচের গুঁড়া
  14. জিরার গুঁড়া
  15. ধনেগুঁড়া
  16. গরম মসলার গুঁড়া
  17. লবণ
  18. কাঁচা মরিচ
  19. পানি

ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি উপকরনের পরিমান

  1. যেকোনো ডাল ২ কাপ
  2. পোলাওয়ের চাল ৪ কাপ
  3. সয়াবিন তেল ১ কাপ
  4. পেঁয়াজকুচি ১.৫ কাপ
  5. এলাচ ৫টি
  6. লবঙ্গ ৫টি
  7. তেজপাতা ৩ টি
  8. দারুচিনি ৩ টি
  9. রসুন বাটা ২ টেবিল চামচ
  10. আদা বাটা ২ টেবিল চামচ
  11. হলুদ ৩ চা চামচ
  12. মরিচের গুঁড়া ২ চা চামচ
  13. জিরার গুঁড়া- ২ চা চামচ
  14. ধনেগুঁড়া ২ চা চামচ
  15. গরম মসলার গুঁড়া ২ চা চামচ
  16. লবণ পরিমান মতো
  17. কাঁচা মরিচ ১০/১২ টি
  18. পানি- ৭ কাপ

ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি যেভাবে তৈরি করতে হবে

  1. ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি কোন কঠিন বিষয় নয়।যদি রান্নার নিয়ম সঠিকভাবে জানা থাকে এবং উপকরণগুলো সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে পারে তাহলে যে কেউ চাইলেই এটি খুব সহজে রান্না করতে পারবে।
  2. ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপিতে মসুর ডাল অথবা মুগ ডাল যে কোন ডাল ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু আমি এই রেসিপিতে ২ কাপ মসুর ডাল ব্যবহার করছি।
  3. প্রথমে একটি পাএে মসুর ডাল গুলো ভেজে হালকা বাদামী রঙের করে নিতে হবে।পোলার চালগুলো ভালো করে ধুয়ে চালনি দিয়ে পানি ঝরতে দিতে হবে এবং পানি ঝরা পর্যন্ত ২০ থেকে ২৫ মিনিট অপেক্ষা করতে হবে।
  4. একটি প্যানে এক কাপ সয়াবিন তেল গরম করে ১.৫ কাপ পেঁয়াজকুচি ও  ২ চা চামচ গরম মসলার গুঁড়া মিশ্রনটি ভেজে নিতে হবে।
  5. এরপর পেঁয়াজ বেরেস্তার রং চলে আসলে আধা কাপ নরমাল পানি দিয়ে  নাড়তে হবে। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর এতে ২চা চামচ আদাবাটা ও ২চা চামচ রসুন বাটা দিয়ে আরো কিছুক্ষণ নাড়তে হবে।
  6. এবার এর মধ্যে সব ধরনের গুড়া মসলা হলুদ ৩ চা চামচ, মরিচের গুঁড়া ২ চা চামচ, জিরার গুঁড়া- ২ চা চামচ,ধনেগুঁড়া ২ চা চামচ, গরম মসলার গুঁড়া ২ চা চামচ, লবণ পরিমান মতো দিয়ে আরো কিছুক্ষণ নাড়তে হবে।নাড়তে নাড়তে তেল ছেড়ে দিলে কয়েক মিনিটের জন্য ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে।
  7. এবার চাল ও ডালের মিশ্রণ সকল মসলার মধ্যে দিয়ে নেড়ে আবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। এরপর মসলাযুক্ত চাল ও ডালের মিশ্রণে সাত কাপ পানি মিশ্রিত করতে হবে।সাথে এলাচ ৫টি,লবঙ্গ ৫টি, তেজপাতা ৩ টি ও  দারুচিনি ৩ টি দিতে হবে যেন সুস্বাদু ভাব আসে।
  8. খিচুড়ির বলক চলে আসলে ১০/১২ টি  কাঁচা মরিচ দিয়ে দিতে হবে। এরপর ঢাকনা দিয়ে ঢেকে ১৫ থেকে ২০ মিনিট দমে রাখতে হবে। এখন পরিবেশন করার পালা ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি।
See also  গরুর মাংসের ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | Beef Vuna khichuri Recipe

এই রান্না ট্টি খেতে কেমন এবং কখন কোন পরিবেশে খেতে হয়

ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি আমাদের মনকে ফুরফুরে করে দিতে বাধ্য। এই রেসিপিটি বৃষ্টির দিনে, শীতের দিনে /রাতে খেতে খুবই সুস্বাদু, অতুলনীয় ও মজাদার হবে।

বৃষ্টির দিনগুলোতে যখন কোন কিছু খেতে বা রান্না করতে ভালো লাগবে না তখন এই রেসিপিটি আমাদের জন্য সহায়ক হবে।অতিথি আপ্যায়নের মত সুন্দর পরিবেশে এই রেসিপিটি ব্যবহার করা যেতে পারে।

এই রান্না খাওয়ার উপকারিতা

  • ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি একই সঙ্গে আমাদের দেহে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিনের সমতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। কারণ এই খিচুড়িতে ব্যবহৃত চাউলের মধ্যে রয়েছে শর্করা ও ডালের মধ্যে রয়েছে উচ্চ প্রোটিন। মসুর ডালে অনেক পুষ্টি উপাদান থাকা যেগুলি শরীরের স্বাস্থ্যকে বৃদ্ধি দেয়:
  • প্রোটিন: মসুর ডাল প্রোটিনের এক বৃদ্ধির উত্তম উৎস। প্রোটিন শরীরের শিক্ষান কাজে সাহায্য করে, মাংসপেশী বিকাশ করে এবং শরীরের স্ট্রাকচার গড়ে তোলে।
  • আয়রন: মসুর ডালে ভাল পরিমাণে আয়রন থাকে, যা রক্ত তৈরি এবং অক্সিজেন পরিবহন করতে সাহায্য করে।
  • ফোলেট (ভিটামিন বি-৯): এটি সেল ডিভিশন এবং সেল নিউক্লিক এর জন্য প্রয়োজনীয় একটি ভিটামিন, যা গর্ভাবস্থা এবং শিশু ডেভেলপমেন্টে মহত্ত্বপূর্ণ।
  • জিংক: জিংক শরীরে নিউরোট্রান্সমিশন, ডিজেস্টিভ সিস্টেম এবং মস্তিষ্ক ফাংশনে মূলভূত ভূমিকা পালন করে।
  • ভিটামিন বি কমপ্লেক্স: মসুর ডালে বিভিন্ন ভিটামিন বি কমপ্লেক্স থাকে, যা শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করে।
  • এই পুষ্টি উপাদানগুলি মসুর ডালকে একটি উত্তম পুষ্টিকর খাবার হিসেবে তৈরি করে এবং আপনার স্বাস্থ্য উন্নত করতে সাহায্য করতে পারে।
  • খাবারকে সুস্বাদু ও মজাদার করে তুলতে হলুদ গুঁড়া ও মরিচ গুঁড়ার বিকল্প নেই।এতে রয়েছে নানান ধরনের পুষ্টিগুণ যা আমাদের দেহের জন্য অত্যন্ত জরুরী।হলুদ মানবদেহে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে।
  • আমাদের দেহে বিভিন্ন কারণে যেসব ফ্রি র্যাডিক্যাল তৈরি হয়, সেগুলো নানা অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। এসব অনাহূত ফ্রি র্যাডিক্যাল নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে হলুদ বেশ কার্যকরী ভূমিকা রাখতে সাহায্য করে। হলুদ গুড়া মানবদেহে নিউরোপ্রটেক্টিভ হিসেবেও কাজ করে।
  • বাঙালির রন্ধন বিলাসে অন্যতম উপাদান মরিচ গুঁড়া, মরিচ গুড়া যেমন আমাদের খাদ্যে স্বাদ ও ঝাল এনে দেয় তেমনি রয়েছে এর বিশেষ পুষ্টি উপাদান।মরিচে আছে ক্যাপসাইসিন নামক একটি বায়ো-অ্যাকটিভ কম্পাউন্ড। যা লিভারে ও রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে।
  • রসুন আমাদের দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় একটি বিশেষ উপাদান; এর মধ্যে আছে- থিয়ামিন (ভিটামিন বি১), রিবোফ্লাবিন (ভিটামিন বি২), নায়াসিন (ভিটামিন বি৩), প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি৫), ভিটামিন বি৬, ফোলেট (ভিটামিন বি৯) ও সেলেনিয়াম।
  • আদার মধ্যে রয়েছে- পটাশিয়াম, আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি–ইনফ্লামেটরি এজেন্ট বিদ্যমান। যার ফলে সকল বয়সী মানুষ আদা খেতে পারেন।
  • উক্ত রেসিপিতে ব্যবহৃত কাঁচা মরিচে রয়েছে বিভিন্ন স্বাস্থ্য উপকারিতা। কাঁচা মরিচে ভিটামিন এ, সি,কে,বি ৬,পটাশিয়াম, কপার ও ম্যাগনেসিয়াম এর মতো পুষ্টিগুণ আছে যা বিভিন্ন রোগের জীবানু মোকাবিলা করতে সহায়তা করতে পারে।
  • এতে আরও রয়েছে অসংখ্য পরিমাণে ডায়েটারি ফাইবার, থিয়ামিন, রাইবোফ্লবিন, নিয়াসিন, ফলেট, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ ও ফসফরাস। যা কোলেস্টেরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে হার্টকে সুস্থ ও সবল রাখতে সহায়তা করে।
  • কাঁচা মরিচ খেলে কঠিন যেসব রোগ থেকে বাঁচতে যায় তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি-রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়তে কাঁচা মরিচ এর অবদান অপরিসীম। ফলে বিভিন্ন ধরনের রোগ সংক্রমণ দেহের কাছে আসারও সুযোগ পাবে না। তাই দৈনিক অন্তত ২টি কাঁচা মরিচ খেতে হবে। ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপিতে ব্যবহৃত  এলাচ হলো প্রাকৃতিক পুষ্টি উপাদানে ভরপুর এটি উপকরণ। যেখানে রয়েছে আয়রন, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, জিঙ্ক, রিবোফ্লাভিন ইত্যাদি এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ম্যাঙ্গানিজ আছে।
  • ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপিতে ব্যবহৃত দারুচিনির গুঁড়া থেকে প্রয়োজনীয় ও উপকারী কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, দ্রবণীয় আঁশ, ম্যাঙ্গানিজ, ক্যালসিয়াম, আয়রন, ভিটামিন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট পাওয়া যায়।
  • লবঙ্গে বিভিন্ন  ধরনের পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যেমন- অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন সি, কে, ম্যাঙ্গানিজ, ফাইবার, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, পটাসিয়াম, সোডিয়াম, আয়রন, ম্যাগনেসিয়াম, জিঙ্ক প্রভৃতি খনিজ উপাদানে পরিপূর্ন। শরীরে এই সব উপাদানের গুরুত্ব অনেক বেশি।
See also  ভাতের চালের খিচুড়ি রেসিপি | vater chaler khichuri

এই রান্না খাওয়ার অপকারিতা

  1. ঝরঝরে ভুনা খিচুড়ি রেসিপি এটি খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতাও রয়েছে।এই খিচুড়িতে যেহেতু বিভিন্ন ধরনের মসলা ব্যবহৃত হয়েছে আমরা জানি কিছু রোগীদের মসলা জাতীয় খাবার খাওয়া একদমই নিষিদ্ধ।
  2. তাই যাদের ওজন দৈহিক উচ্চতা অনুযায়ী অতিরিক্ত বেশি এবং খাওয়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিধি নিষেধ রয়েছে এবং জটিল রোগবালাই রয়েছে তাদের এই রেসিপিটি খাওয়ার সময় অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যেন এটি তার দেহে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না করে।

Rk Raihan

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *