Table of Contents
- বিয়ে বাড়ির পোলাও রান্নার রেসিপি
- বিয়ে বাড়ির পোলাও রান্নার রেসিপি -রান্নার উপকরনসমূহ
- উপকরণের পরিমান
- বিয়ে বাড়ির পোলাও রান্নার রেসিপি কিভাবে রান্না করতে হয়
- এই রান্নাটি খেতে কেমন এবং কখন কোন পরিবেশে খেতে হয়
- এই রান্না খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদানসমূহ
- উক্ত রেসিপিতে ব্যবহৃত এলাচের মধ্যে বেশ উপকারিতা রয়েছে সেগুলো হল-
- এই রান্না খাওয়ার অপকারিতা
- Rk Raihan

বিয়ে বাড়ির পোলাও রান্নার রেসিপি– যদি বলা হয় আজকে বিশেষ কিছু ভালো খাবার খেতেই হবে তাহলে সর্বপ্রথম যে রেসিপিটি চিন্তায় আসবে সেটি হচ্ছে বিয়ে বাড়ির পোলাও রান্নার রেসিপি। পোলাও রান্না এমন একটি বিখ্যাত রেসিপি যেটি বাংলাদেশ ভারত, পাকিস্তান এমনকি বিভিন্ন আরবদেশ সহ অনেক জাতির মানুষের কাছে জনপ্রিয় একটি খাবার।
বিয়ে বাড়ির পোলাও রান্নার রেসিপি
বাঙালিরা যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে, উৎসবে, এমনকি ছুটির দিনগুলোতে বিয়ে বাড়ির পোলাও রান্নার রেসিপি কে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকে।
বিয়ে বাড়ির পোলাও রান্নার রেসিপি -রান্নার উপকরনসমূহ
- চাল
- কাঁচা মরিচ
- পেঁয়াজ কুচি
- তেজপাতা
- দারুচিনি
- এলাচ
- আদা বাটা
- কিশমিশ
- গরম পানি
- লবণ
- ঘি
উপকরণের পরিমান
- চাল- ১ কেজি
- কাঁচা মরিচ- ৫/৬ টি
- পেঁয়াজ কুচি- ১ কাপ
- তেজপাতা- ৩টি
- দারুচিনি- ৫/৬ টুকরা
- এলাচ- ৪/৫টি
- আদা বাটা- ২চামচ
- কিশমিশ ৫/৬ টি
- ফুটন্ত পানি
- লবণ- পরিমানমতো
- ঘি – পরিমানমতো।
বিয়ে বাড়ির পোলাও রান্নার রেসিপি কিভাবে রান্না করতে হয়
- সর্বপ্রথম একটি পরিস্কার পাত্রে চাল গুলো ধুয়ে নিতে হবে। এরপর চালগুলো থেকে পানি ঝরানোর জন্য চালনি দিয়ে ছেকে নিয়ে কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবে।
- অপর একটি পাত্রে ঘি গরম করে নিতে হবে।এই রেসিপিতে আমি তেলের বদলে ঘি ব্যবহার করছি কারণ তেলের তুলনায় ঘি এর পুষ্টি উপাদান খুবই বেশি যা দেহের জন্য কার্যকরী।
- সেখানে পেঁয়াজ কুচি- ১ কাপ, তেজপাতা ৩টি ও দারুচিনি- ৫/৬ টুকরা দিয়ে ভালোভাবে কিছুক্ষণ নেড়ে নিতে হবে।
- অতপর সেই মিশ্রণটিতে আদাবাটা ও পরিমাণ মতো লবণ মিশ্রিত করে আবার নাড়তে হবে।
- এতক্ষনে চালগুলো থেকে পানি ঝরিয়ে গেলে চালগুলো সেই পাত্রে দিয়ে দিতে হবে এবং ভালোমতো নেড়ে ঢাকনা দিয়ে ঢেকে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে।
- পরবর্তীতে এলাচ- ৪/৫টি, কিশমিশ ৫/৬ টি দিতে হবে ও চালে ফুটন্ত গরম পানি দিয়ে ঢাকনা দিয়ে ২০ থেকে ২৫ মিনিট ঢেকে রাখতে হবে।
- সুন্দর ভাবে চাল সিদ্ধ হয়ে এলে পোলাও এর উপর কাঁচা মরিচ ও ঘি দিয়ে আবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে। কাঁচামরিচ ও ঘি এর মিশ্রনের ফলে পোলাওয়ে সুঘ্রাণ ও সুস্বাদুপূর্ণ স্বাদ বৃদ্ধি পায়।
- পোলাও রান্নার রেসিপি সমপন্ন হয়ে গেলে সুন্দর একটি পাত্রে পরিবেশন করুন, এমনকি পরিবেশনের সৌন্দর্য বৃদ্ধির স্বার্থে পেঁয়াজ ভেজে বেরেস্তা করে পোলা এর উপর ছিটিয়ে দিতে পারেন।
এই রান্নাটি খেতে কেমন এবং কখন কোন পরিবেশে খেতে হয়
- বিশেষ দিন, অনুষ্ঠান, বাড়িতে মেহমান এলে বা বিয়ে বাড়িতে গেলে পোলাও রান্না খেতে বেশ মজাদার হয়ে থাকে।
- এছাড়াও গ্রীষ্মকাল, বসন্তকাল ও শরৎকালে পোলাও রান্নার রেসিপি বেশ জনপ্রিয় হয়ে থাকে।
এই রান্না খাওয়ার উপকারিতা ও পুষ্টি উপাদানসমূহ
- সাধারণত পোলাও রান্নায় যে সকল উপকরণ ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলোর মধ্যে প্রত্যেকটিতে বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান উপস্থিত আছে যা আমাদের মানব দেহে বিভিন্ন প্রকারে আসে।
- পোলাতে যে চাল ব্যবহৃত হয়ে থাকে সেটি কার্বোহাইড্রেট এর প্রধান উৎস হিসেবে কাজ করে তাই পোলাওকে উচ্চ কার্বোহাইড্রেট সম্পন্ন খাদ্য বলা যেতে পারে, যা আমাদের দেহে কার্বোহাইড্রেট এর সমতা বজায় রাখে।
- উক্ত রেসিপিতে ব্যবহৃত ঘি এর উপকারিতার কথা বললে শেষ করা যাবে না।
- এই রেসিপিতে ব্যবহৃত ঘি আমাদের দেহে চর্বির সমতা বজায় রাখে। এমনকি ঘি এর মধ্যে রয়েছে ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন ‘ই’ ও ভিটামিন ‘ডি’।
- অনেক মনে করে থাকেন ঘি আমাদের জন্য উপকারী নয় যেহেতু এতে চর্বি রয়েছে। কিন্তু ঘি তে চর্বির পরিমাণ কিছুটা কম থাকায় যে “ওমেগা থ্রি ফ্যাট” রয়েছে এটি সকল বয়সের জন্যই উপযুক্ত।
- ঘিতে উপস্থিত ভিটামিন এ ও ভিটামিন ই আমাদের দেহে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। এই অ্যান্টি অক্সিডেন্টের প্রধান কাজ হচ্ছে মানব দেহকে ক্যান্সার ও চর্মরোগ থেকে বিরত রাখা। যার ফলে আমাদের দেহ সুস্থ ও সুন্দর থাকতে সক্ষম হবে।
- অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং দেহের ‘ইমিউন সিস্টেম’কে চার্জ করে।
- পোলাও রান্নার রেসিপিতে ব্যবহৃত পেঁয়াজে রয়েছে ভিটামিন বি১ (থায়ামিন), বি২ (রিবোফ্লাবিন), বি৩ (নিয়াসিন), বি৫ (প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড), বি৬, বি৯ (ফোলেট) ও ভিটামিন সি। পেঁয়াজ দেহে শক্তি জোগায়, বিভিন্ন ভিটামিনের গুণ দিয়ে দেহকে সাবলীল রাখতে সাহায্য করে, হার্টের কার্যক্ষমতা ও কার্ডিভাসকুলার ফাংশন ঠিকঠাক রাখতে সাহায্য করে।
- রেসিপিতে উল্লেখিত কাঁচা মরিচে যে উপকারিতা রয়েছে সেগুলো হল- বিটা-ক্যারোটিন, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট, এন্ডোরফিনের মতো উপকারী পুষ্টিগুণ, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। যেখানে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। ক্যানসার নিরাময় ও মানসিক অবসাদ হ্রাস করতে কাঁচা মরিচ শরীরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে । কাঁচা মরিচের মধ্যে থাকা উপাদান রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
উক্ত রেসিপিতে ব্যবহৃত এলাচের মধ্যে বেশ উপকারিতা রয়েছে সেগুলো হল-
- এলাচ হার্টের জন্য উপকারী ও হজম শক্তির বৃদ্ধিতে সহায়ক,দেহের ডিটক্সিফিক্সন ও টক্সিন মুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
- রেসিপিতে ব্যবহৃত দারুচিনির যে সকল পুষ্টিগুণ রয়েছে তা হলো- ওজন কমানো, স্মরণ শক্তি বৃদ্ধি করা, বাত ব্যথা দূর করা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণ, এবং পেটের বিভিন্ন সমস্যা রক্ষায় সাহায্য করে।
- পোলাও রান্নার রেসিপিতে শুঘ্রাণ সৃষ্টি করার পাশাপাশি তেজপাতা দৈহিক কিছু উপকারিতা বয়ে আনে। যেমন- তেজপাতার অন্যতম গুণ হলো এটি প্রদাহের বিরুদ্ধে কাজ করে। এটি যেকোনো ধরনের মাথাব্যথা উপশমে কার্যকরী ভূমিকা রাখে। তেজপাতায় আছে ফাইটো নিউট্রিয়েন্ট উপাদান, যা প্রদাহ দূর করে। ব্যথা থেকে মুক্তি দেয়।
এই রান্না খাওয়ার অপকারিতা
- পোলাও রান্না রেসিপি খাওয়ার উপকারিতার পাশাপাশি বেশ কিছু অপকারিতাও রয়েছে। যেমন- যাদের একটু বয়স ভারী হয়ে গিয়েছে তাদের জন্য এই জাতীয় রেসিপি খাওয়া উত্তম নয়।
- বয়স্ক বা বৃদ্ধ ব্যক্তিদের এই জাতীয় রেসিপি খুব হিসেব করে পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে যেন তাদের দেহে বিপরীত প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি না হয়।
- এছাড়াও যেসব ব্যক্তিদের ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় অতিরিক্ত বেশি তাদেরকে বিয়ে বাড়ির পোলাও রান্নার রেসিপিটি মাথায় রেখে সতর্কভাবে খেতে হবে যেন ওজন আরো বৃদ্ধি না পায়। তা না হলে যেহেতু এটি মসলা ও তেল জাতীয় খাদ্য তাই দেহের উপর খারাপ প্রভাব সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি।