
বাণিজ্যিক খামারের প্রয়োজনীয়তা ব্যাখ্যা কর – মুনাফা অর্জনের আশায় নির্দিষ্ট পরিমাণ মূলধন বিনিয়োগের মাধ্যমে যে খামার গড়ে তোলা হয় তাকে বাণিজ্যিক খামার বলে। বাণিজ্যিক খামার আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের বিরাট ভূমিকা পালন করছে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের কথা চিন্তা করলে বাণিজ্যিক খামারের প্রয়োজনীয়তা বলে শেষ করা যাবে না। আজকের এই পোস্টটি যদি মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে আপনি যে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হতে পারবেন সেটি হচ্ছে, বাণিজ্যিক খামারের প্রয়োজনীয়তা ছাড়া দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।
বাণিজ্যিক খামারের প্রয়োজনীয়তায় কৃষি খাতের অবদান অপরিশীম। কৃষি খাত আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের সর্বোত্তম মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমাদের দেশে যুগ যুগ ধরে কৃষকরা কৃষিকাজের মাধ্যমেই তাদের জীবন পরিচালনা করছে এমনকি কৃষি খাত এমন একটি মাধ্যম যদি কোন ব্যক্তি বেকার থাকে তাহলে সে কৃষিখাতে জ্ঞান অর্জন করে কৃষকাজ করেও তার জীবন যাপন পরিচালনা করতে পারেন এবং অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে।
যদি কারো নিজস্ব জমি থাকে তাহলে সে নিশ্চিন্তে তার পছন্দ অনুযায়ী বিভিন্ন খাদ্য উৎপাদন জমিতে চাষ করেও লাভবান হতে পারে।
বাণিজ্যিক খামারের প্রয়োজনীয়তায় পশুপালন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। গ্রামাঞ্চলে সাধারণত জমির পরিমাণ খুবই বেশি পরিমাণে থাকে কারণ গ্রামাঞ্চল ঢাকা শহরের মতো অতটা ঘনবসতিপূর্ণ হয় না।
তাই গ্রাম অঞ্চলে যদি পশু পালন করা যায় যেমন গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ এসব পালন করার ফলে সেই পশু যদি বাচ্চা দেয় সেগুলো বড় হবার পর বাজারে বিক্রি করে আর্থিকভাবে অনেকে লাভবান হতে পারে যা বেকারত্ব দূরীকরণে বিশেষভাবে সহায়তা করবে।
অনেক সময় দেখা যায় কারো খামারে যদি পশু বেশি থাকে তাহলে কয়েকটি পশু জবাই করে যে পরিমাণ মাংস পাওয়া যায় সে পশুর মাংস খেয়েও প্রোটিনের চাহিদা পূরন করা সম্ভব তেমনি সেই মাংস বাজার বিক্রি করে আর্থিকভাবেও স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব।এসকল পশু পালন করার মাধ্যমে যে শুধু বাণিজ্যিকভাবেই লাভবান হবে তা নয় দৈহিক পুষ্টির দিক দিয়েও লাভবান হবে।
দুগ্ধ খামার বাণিজ্যিক খামারের প্রয়োজনীয়তায়
একটি বিশেষ অংশ জুরে নিয়েছে। দুগ্ধ খামার বলতে বোঝায় যে খামারে এমন কিছু পশু লালিত পালিত হবে যে সকল পশুরা খাঁটি দুধ প্রদান করে থাকে এবং সে খাঁটি দুধ বাজারে বিক্রি করে কৃষকরা বাণিজ্যিক খাতে ব্যাপক লাভবান হচ্ছে। এমনকি পশু খামারে যেই দুধ দিয়ে থাকে সেই দুধ নিজেরা পান করে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব।
বাণিজ্যিক খামারের প্রয়োজনীয়তায় মাছের খামারের ভূমিকা অপরিশীম।মাছের খামার বলতে বোঝায় যে খামারে শুধুমাত্র বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা হয়।
এমন কিছু মাছ চাষ করা হয় যে মাছ আমাদের দৈহিক পুস্টি চাহিদা পূরনের পাশাপাশি বাণিজ্যিক অবদানও রাখে। মাছের খামার থেকে মাছগুলো বিভিন্ন এরিয়াতে বিক্রি করার ফলে মাছের চাষিরা যেমন লাভবান হচ্ছে তেমনি শহর অঞ্চলের মানুষরাও গ্রামাঞ্চলের খামারের মাছ খেয়ে দৈহিকভাবে উপকৃত হচ্ছে।
বাণিজ্যিক খামারের প্রয়োজনীয়তায় সবজি চাষের বিকল্প নেই। সবজি খামার এমন একটি খামার যেখানে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করা হয়।
মানবদেহ উন্নয়নে সবজির কোন বিকল্প নেই। সবজি খামার যেমন আমাদের দৈহিক উন্নয়নে অবদান রাখছে তেমনি আর্থিকভাবে আরও বেশি অবদান রাখছে। ঢাকা শহর বা গ্রামে এমন কোন স্থান নেই যেখানে সবজি বিক্রি হয় না।
গ্রামে কৃষকরা যদি সবজি খামারে ফ্রেশ ও তাজা সবজি নিয়মিত চাষ করতে পারে তাহলে সবজি খামার দিয়েই গ্রাম ও শহরের মানুষ আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে। এছাড়া যারা বেকার যুবক রয়েছে তারা সবজি খামার দিয়ে বেকারত্ব দূর করতে পারে।
সুতরাং বলা যায়, দেশের দারিদ্রতা ও বেকারত্ব দূরীকরণে এবং দেশের বেকার জনগণকে আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে বাণিজ্যিক খামারের প্রয়োজনীয়তা অপরিশীম।