- সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | sobji bhuna khichuri
- সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | sobji bhuna khichuri এর উপকরণ:
- সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | sobji bhuna khichuri উপকরণের পরিমান:
- সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | sobji bhuna khichuri রেসিপির প্রস্তুত প্রণালী
- সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি খেতে কেমন?কখন /কোন পরিবেশে খেতে হয়-
- সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি খাওয়ার উপকারিতা
- এই রান্না খাওয়ার অপকারিতা
- Rk Raihan

সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি ( sobji bhuna khichuri ) ভুনা খিচুড়ি সকলেই পছন্দ করে কিন্তু সবজি ভুনা খিচুড়ি অনেকেই পছন্দ করে না কারণ সবজির স্বাদ, গন্ধ ও ফ্লেভার অনেকেই অপছন্দ করেন।
সবজি ভুনা খিচুড়ি সুষ্ঠু ও সুন্দর নিয়ম অনুযায়ী রান্না করতে সক্ষম হলে খেতে যেমন সুস্বাদু তেমনি এর পুষ্টিগুণ অন্যান্য খিচুড়ি তুলনায় অনেক বেশি হয়ে থাকে। সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি হিন্দুরা তাদের পুজোর সময় ভোগ হিসেবে ব্যবহার করে থাকেন।
সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | sobji bhuna khichuri
এমন বাঙালি খুব কমই আছেন যারা সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি পছন্দ করেন না। এমনকি শিশু থেকে বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত সকলেই সবজি ভুনা খিচুড়ি পছন্দ করে থাকেন।
সকল বয়সের মানুষের জন্য এই সবজি খিচুড়িটি পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে বিবেচিত। আজ আমি আপনাদের সাথে এমন একটি সহজ রেসিপি শেয়ার করব যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই সবজি ভুনা খিচুড়ি রান্না করতে পারেন।
সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | sobji bhuna khichuri এর উপকরণ:
- ভাতের চাল
- মুগ ডাল
- সবজি- আলু, গাজর, বরবটি, মটরশুটি, ফুলকপি,বাধাকপি ছোট কিউব করে কাটা- ১ কাপ
- পানি
- আদা বাটা, রসুন বাটা
- লবণ
- হলুদ গুঁড়া
- সয়াবিন তেল
- ঘি
- এলাচ
- দারুচিনি
- জিরা
- শুকনা মরিচ
- কাঁচামরিচ
- কাজুবাদাম কুচি
- কিশমিশ
- চেরি
- ভাজা নারিকেল কুচি (সাজানোর জন্য)
সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | sobji bhuna khichuri উপকরণের পরিমান:
- ভাতের চাল- ৪ কাপ
- মুগ ডাল- ২ কাপ
- সবজি ছোট কিউব করে কাটা- ২.৫ কাপ (আলু, গাজর, বরবটি, মটরশুটি, ফুলকপি,বাধাকপি)
- পানি- ৪.৫ কাপ
- আদা-রসুনবাটা- ৩ চা চামচ
- লবণ- পরিমাণমতো
- চিনি- ১ চা চামচ
- হলুদ গুঁড়া- ৩.৫ চা চামচ
- সয়াবিন তেল- ৯ টেবিল চামচ
- ঘি- ৬ টেবিল চামচ
- এলাচ-৫টা
- দারুচিনি
- হিং- ১ চা চামচ
- জিরা- ২ চা চামচ
- শুকনা মরিচ- ৬টা
- কাঁচামরিচ- ৮/৯টা
- কাজুবাদাম কুচি- ৩ টেবিল চামচ
- কিশমিশ- ১২/১৩টা
- চেরি
- ভাজা নারিকেল কুচি (পরিবেশনের জন্য)।
সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি | sobji bhuna khichuri রেসিপির প্রস্তুত প্রণালী
ধাপ১- সর্বপ্রথম মুগ ডালগুলো ধুয়ে ভালোভাবে সিদ্ধ করে নিতে হবে। এরপর একটি পরিস্কার পাত্রে ৯ টেবিল চামচ সয়াবিন তেল গরম করে সেখানে ১ চা চামচ হিং, তেজপাতা, ৬টা শুকনা মরিচ,৫টা এলাচ, দারুচিনি এবং জিরা পাচফোঁড়ন দিয়ে নাড়া দিতে হবে।
ধাপ২- এরপর সব ধরনের সবজি( আলু, গাজর, বরবটি, মটরশুটি, ফুলকপি, বাধাকপি প্যানে দিয়ে সুন্দর করে ভেজে নিয়ে পাঁচ থেকে ছয় মিনিট অপেক্ষা করতে হবে হবে।
ধাপ৩- এরপর এক এক করে ৪কাপ ভাতের চাল, কাজুবাদাম কুচি ৩ টেবিল চামচ, ১২/১৩টা কিশমিশ,৩চা চামচ আদা-রসুন বাটা,স্বাদমতো লবণ, হলুদ গুঁড়া দিয়ে ভালো করে ভেজে অর্ধ সিদ্ধ ডাল, পরিমাণমতো পানি, কাঁচামরিচ দিয়ে ফুটিয়ে নিতে হবে।
ধাপ৪- পানির পরিমান কমে আসলে চুলার আঁচ কমিয়ে দিয়ে ২ থেকে ৩ টেবিল চামচ ঘি ছড়িয়ে দিয়ে নাড়াচাড়া করে আবার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর ঢাকনা তুলে যখন দেখা যাবে, সম্পূর্ণ পানি শুকিয়ে এসেছে তখন চেরি কুচি ও ভাজা নারকেল কুচি ছড়িয়ে দিয়ে পরিবেশন করার পালা সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি।
সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি খেতে কেমন?কখন /কোন পরিবেশে খেতে হয়-
এই খিচুড়ি রেসিপিটি কোন শীতের রাতে বা বৃষ্টি বিলাস দিনের মধ্যে খেতে সুস্বাদু ও মজাদার ও অমায়িক হতে পারে।
সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি খাওয়ার উপকারিতা
- সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি এটির অনেক ধরনের উপকারিতা রয়েছে যা আমাদের সুস্বাস্থ্য ও সুন্দর দৈহিক উন্নতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যেহেতু এই রেসিপিতে বিভিন্ন ধরনের সবজি মিশ্রিত আছে তাই এই রেসিপিটির সাথে অন্য কোন খিচুড়ির তুলনা হয় না।আমরা জানি, আমাদের মানবদেহের উন্নতির জন্য সবজি কতটা অতুলনীয় ভূমিকা পালন করে।সবজিতে এমন কিছু ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান রয়েছে যা ছাড়া আমাদের মানব দেহের সুস্থ্যতা বজায় রাখা সম্ভব নয়।
- এই খিচুড়িতে যে ধরনের সবজিগুলো ব্যবহৃত হয়েছে তার পুষ্টিগুণ নিয়ে আলোচনা করা যাক-
- পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন শাক সবজির মধ্যে আলু অন্যতম। বাঙ্গালীদের খাদ্য তালিকায় আলু একটি জনপ্রিয় সবজি।অনেক সময় আমরা ভাতের বদলে আলুকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকি। ভাতের বিকল্প হিসেবে আলু কার্বোহাইড্রেট এর ভালো কাজ করে।
- আলুর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি যা আমাদের দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়ক।আলুতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাশিয়াম রয়েছে যা উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে।এছাড়াও আলুতে আছে-গ্লুকোজ, অক্সিজেন, ভিটামিন বি কমপ্লেক্স, এমিনো এসিড, ওমেগা-৩ ও অন্যান্য ফ্যাটি এসিড যা মস্তিষ্ককে সচল ও কর্মক্ষম করতে সহায়তা করে।
- এই খিচুড়িতে ব্যবহৃত গাজরের মধ্যে রয়েছে অনেক ধরনের উপকারিতা যেমন- গাজর আমাদের হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে, কোলেস্টেরল কমায়, ওজন কমায়, ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে,ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া ভাব হ্রাস করে,শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা ও জ্বালাপোড়ার যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে।
- সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি এটিতে বরবটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।বরবটি আমাদের দেহে আয়রনের ঘাটতি কমাতে সাহায্য করে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে,এছাড়াও আমাদের দেহের হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, দেহের চর্বি হ্রাস করতে সহায়তা করে।
- বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে খাদ্যআঁশ বা ফাইবার আছে যা কোন ক্যালরি ব্যতীত পেট ভরা রাখতে সহায়তা করে। যাঁরা ওজন কমাতে আগ্রহী তাঁরা তাঁদের প্রতিদিনের খাবারের সময় বাঁধাকপি রাখতে পারেন। বাঁধাকপিতে কোলেস্টেরল ও চর্বির পরিমান খুবই কম থাকায় ওজন কমাতে সাহায্য করে।বাঁধাকপিতে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও সোডিয়াম আছে যা মানবদেহের হাড়ের বিভিন্ন রোগ দূর করতে সাহায্য করে। এছাড়াও বাঁধাকপিতে রয়েছে প্রচুর পরিমান ভিটামিন যা হাড়কে মজবুত রাখতে সহায়তা করে। যাঁরা নিয়মিত বাঁধাকপি খেয়ে থাকে তাঁদের বার্ধক্যজনিত হাড়ের সমস্যার সমাধান হয়। সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে বাঁধাকপির রস আলসার নিরাময়ে খুবই সহায়ক ভূমিকা পালন করে।
- যারা কিডনি রোগী আছেন এবং ডায়ালসিস করে থাকেন তাদের জন্য কাঁচা বাঁধাকপি খাওয়া খুবই উপকারী।আমাদের আশেপাশে আমার অনেক ব্যক্তিরা আছেন যারা চুল পড়া সমস্যা নিয়ে খুবই চিন্তিত যারা চুল পড়ার সমস্যা প্রতিরোধ করতে চান তারা এই রেসিপির সাথে বাধাকপি খেতে পারে।বাঁধাকপি আমাদের দেহের চোখ ও ত্বকের রোগ থেকে রক্ষা করে।মটরশুটিতে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার ফলে এটি বয়স ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও প্রাণশক্তি বৃদ্ধি করে।
- মটরশুঁটি রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করে। যার ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি খুবই উপকারী।এই রেসিপিতে ব্যবহৃত ফুলকপির মধ্যে বিশেষ কিছু পুষ্টি উপাদান রয়েছে সেগুলো হল-ভিটামিন এ,বি, সি। এ ছাড়া শরীরের জন্য অধিক প্রয়োজনীয় আয়রন, ফসফরাস, পটাসিয়াম, ক্যালসিয়াম ও সালফার। মরণ বৃদ্ধি ক্যান্সারের মতো রোগ প্রতিরোধ করতে ফুলকপি অতুলনীয় ভূমিকা পালন করে।ফুলকপির ভিটামিন এ, সি শীতকালীন নানা রোগ জীবানু দূরীকরনে বিশেষ সহায়তা করে।
এই রান্না খাওয়ার অপকারিতা
- সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপি এর উপকারিতার পাশাপাশি কিছু অপকারিতা রয়েছে। শীতকালীন সবজি গ্যাস্ট্রিক রোগীদের জন্য খাওয়া কিছুটা নিষিদ্ধ আছে যেহেতু ফুলকপি, বাঁধাকপি শীতকালিন সবজি তাই এই রেসিপি গ্যাস্ট্রিকের রোগীদের হিসাব করে খাওয়া উচিত।
- এই খিচুড়ির রেসিপিতে কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন একটু বেশি পরিমাণে আছে বলে ধারণা করা হয়।যে সকল রোগীদের কার্বোহাইড্রেট ও প্রোটিন খাওয়ায় অতিরিক্ত বিধি নিষেধ রয়েছে তাদের এই সবজি ভুনা খিচুড়ি রেসিপিটি প্রয়োজনের তুলনায় কম খাওয়া উত্তম।তা না হলে স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।