
৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি – অনেক মা-বাবারা ৮ মাস বয়সী শিশুকে খিচুড়ি খাওয়ানো নিয়ে সন্দেহ প্রবনতায় ভুগে থাকেন। ৮ মাস বয়সী শিশুদের খাবারে খিচুড়ি প্রদান করা অত্যন্ত জরুরি। যাতে তাদের শারীরিক এবং মানসিক বৃদ্ধি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হতে পারে।
কারণ এই সময়টি শিশুর বেড়ে ওঠার বাড়ন্ত বয়স। ৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি এখানে বেশি ধরনের মসলা জাতীয় দ্রব্য ব্যবহার করা যাবে না কারণ বিভিন্ন ধরনের মসলা জাতীয় দ্রব্য ৮ মাস বয়সী শিশুর দেহে প্রবেশ করলে দেহে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে।
৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি তে যে উপকরণ গুলো সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন এবং প্রধান সেগুলো নিয়ে আলোচনা করা যাক।
৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি উপকরনসমূহ
- চাল
- মসুরের ডাল
- মুরগীর মাংস (হাড় ছাড়া)
- গাজর:
- বরবটি:
- পেঁয়াজ:
- তেল:
- মশলা আদা রসুন বাটা ও হলুদ গুঁড়া:
- পানি:
৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি উপকরনের পরিমান
- চাল: ৩০ (গ্রাম) ১ ও ১/২ মুঠ
- মসুরের ডাল: ১৫ (গ্রাম) ২/৩মুঠ
- মুরগীর মাংস (হাড় ছাড়া) : ২৫ (গ্রাম)
- গাজর: ১০ (গ্রাম) ১ পিস
- বরবটি: ৫ (গ্রাম) ১ পিস
- পেঁয়াজ: ২০ (গ্রাম) ১টি
- তেল/ঘি: ১০ (গ্রাম) ২ চা চামচ
- মশলা আদা রসুন বাটা ও হলুদ গুঁড়া: পরিমাণ মত দিবেন
- পানি: ৩৮০ (গ্রাম) ১ ও ২/৩ গ্লাস
৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি প্রস্তুত প্রণালী
৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি প্রস্তুত প্রণালী অথবা রান্নার প্রক্রিয়াটি অন্যান্য খিচুড়ি রান্নার তুলনায় অবশ্যই ভিন্ন হবে।
ধাপ১- সর্বপ্রথম চাল এবং ডাল ভালোমত পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে ফুটানো পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে। ১৫ মিনিট পর ভালোমত চালনি দিয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এরপর সব সবজি ও পেঁয়াজ ভালোমত ধুয়ে কেটে নিতে হবে।
ধাপ২- একটি পরিস্কার পাএে তেল গরম করতে হবে। তেল গরম করার পর ২০ গ্রাম পেঁয়াজ কুচি, একদম পরিমানমত আদা বাটা, রসুন বাটা যুক্ত করতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেহেতু এটি ৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি এখানে বেশি ধরনের মসলার পরিমাণ প্রয়োজনে তুলনায় অতিরিক্ত হওয়া যাবে না। চাইলে হালকা করে হলুদের গুড়া যুক্ত করতে পারেন অথবা নাও পারেন।
ধাপ৩- পেঁয়াজ ও মসলাগুলো হালকা ভেজে নেয়ার পর এখানে কাটা ছাড়া মাছ অথবা হাড় ছাড়া মাংসের টুকরাগুলো দিয়ে নিতে হবে। আপনি চাইলে হাড় ছাড়া মাংসও ব্যবহার করতে পারেন আবার কাটা ছাড়া মাছও ব্যবহার করতে পারেন।
কাটা ছাড়া মাছ অথবা হাড় ছাড়া মাংস দুটিই ৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি তে যথাযথ ও পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান বজায় রাখতে সাহায্য করে।কিছুক্ষন নাড়াচড়া করার পর চাল ও ডালের মিশন এখানে ঢেলে দিতে হবে এবং নাড়তে হবে।
এরপর স্বাদ অনুযায়ী লবণ যুক্ত করতে হবে।আবারও অল্প আছে পাঁচ থেকে ছয় মিনিট নাড়া চাড়া করতে হবে।চাল-ডাল সামান্য ভাজা হয়ে গেলে এতে প্রয়োজনমত ৩৮০ (গ্রাম) ১ ও ২/৩ গ্লাস পানি (সম্ভব হলে গরম পানি) যোগ করতে হবে এবং রান্না হওয়ার জন্য পাত্রটি একটি পরিষ্কার ঢাকনা দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
ধাপ৪- চাল এবং ডাল অর্ধেক সিদ্ধ হয়ে আসার পর এখানে সবজিগুলো( গাজর: ১০ (গ্রাম) ১ পিস, বরবটি: ৫ (গ্রাম) ১ পিস) মিশ্রিত করে দিতে হবে ও ভালোমত নাড়াচাড়া করতে হবে যাতে সবগুলো উপকরণ একসাথে মিশে যেতে পারে। পাত্রটি আবারও ঢেকে দিতে হবে। সবগুলো উপকরণ ভালোমত সিদ্ধ হয়ে এলে চুলা থেকে নামিয়ে ফেলতে হবে।যদি মনে হয় খিচুড়ি নরম হয়নি তাহলে প্রয়োজনে শিশুকে খাওয়ানোর আগে খিচুড়ি চামচ দিয়ে বা হাত দিয়ে সামান্য চটকিয়ে নরম করে নিতে হবে এবং শিশুকে পরিবেশন করতে হবে।
এই রান্না ট্টি খেতে কেমন এবং কখন কোন পরিবেশে খেতে হয়
৮ মাস বয়সী শিশুরা খিচুড়ি খাওয়ার জন্য প্রাথমিকভাবে মধ্যাহ্নের সময় উপযুক্ত হতে পারে। এই সময়ে তাদের পাচন প্রণালী প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি করে খাবার পরিষ্কার রক্ষণ করে। তবে, বাচ্চার খাবারের সময়সূচি স্থায়ী নয়, তাই তাদের সম্প্রতি অবস্থা এবং পরিস্থিতি দেখে খাদ্য সূচি নির্ধারণ করা উচিত।।
এই রান্না খাওয়ার উপকারিতা
- ৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি অনুযায়ী শিশুর জন্য এই রান্নাটি খাওয়ার ফলে দৈহিক অনেক উপকার রয়েছে।যা শিশুকে শারীরিক ও মানসিকভাবে বেড়ে উঠতে সহায়তা করবে।৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি খাওয়ার উপকারিতা বিষয়ে এই বয়সে এই ধরনের খাবার দেওয়া একটি বড় স্টেপ হতে পারে, যা বাচ্চার পুষ্টি ও বৃদ্ধি সহায়ক হতে পারে:
- পুষ্টি সরবরাহ: খিচুড়ি বাচ্চার উপাদানমূলক পুষ্টি সরবরাহ করে, যেগুলো তার শারীরিক এবং মানসিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন।চাল, মসুর ডাল ও সবজির এই মিশ্রণ প্রোটিন, ফাইবার, ভিটামিন এবং মিনারেলস সরবরাহ করে, যা শারীরের সঠিক ডেভেলপমেন্ট সাহায্য করে।
- ডেইরি উপাদান সরবরাহ: বাচ্চার বৃদ্ধি ও শরীরের সুরক্ষায় সাহায্য করতে খিচুড়ি ডেইরি উপাদান সরবরাহ করতে পারে, যেমন ঘি। এই উপাদানগুলি দেহে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টি জোগাতে সাহায্য করে।
- পাচনশক্তি বৃদ্ধি: খিচুড়ি মানবদেহে সহজে পাচন হয় এবং ডেইরি উপাদানের উপস্থিতি মধ্যে পাচনশক্তি বৃদ্ধি সাহায্য করে।
- সব্জি এবং ডেইরি পুষ্টি: খিচুড়ি থাকা সবজি বাচ্চার পুষ্টি সরবরাহ করে এবং ডেইরি উপাদান থাকা সাথে তার স্বাস্থ্য ও বৃদ্ধি বৃদ্ধি সাহায্য করে।
- অল্প সময়ে প্রস্তাবনা: খিচুড়ি তৈরি করা সহজ এবং অল্প সময় নেয়, এবং ব্যস্ত অভিভাবকদের জন্য উপযুক্ত হতে পারে।
- মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে, প্রথমে আপনার শিশুর প্রাকৃতিক প্রান্তিক প্রস্তুতি , ডেভেলপমেন্ট এবং তার ডায়েট স্বাস্থ্যকর আছে কিনা তা নিশ্চিত করার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত।
- উক্ত রেসিপিতে ব্যবহৃত আদা রসুন বাটার মাধ্যমে শিশু এসকল পুষ্টি উৎপাদন ভোগ করতে পারে – থিয়ামিন (ভিটামিন বি১), রিবোফ্লাবিন (ভিটামিন বি২), নায়াসিন (ভিটামিন বি৩), প্যান্টোথেনিক অ্যাসিড (ভিটামিন বি৫), ভিটামিন বি৬, ফোলেট (ভিটামিন বি৯) ও সেলেনিয়াম।আদার মধ্যে রয়েছে- পটাশিয়াম, আয়রণ, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালশিয়াম, ফসফরাস, সোডিয়াম, জিংক, ম্যাঙ্গানিজ, ভিটামিন এ, বি৬, ই ও সি এবং অ্যান্টি–ব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট ও অ্যান্টি–ইনফ্লামেটরি এজেন্ট বিদ্যমান।
- ৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি এটিতে ব্যবহৃত গাজরের মধ্যে রয়েছে অনেক ধরনের উপকারিতা যেমন- গাজর শিশুর হাড়ের শক্তি বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে, কোলেস্টেরল কমায়, ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে, ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে, হজম শক্তি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে,ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে, ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া ভাব হ্রাস করে,শরীরের বিভিন্ন ধরনের ব্যথা ও জ্বালাপোড়ার যন্ত্রণা কমাতে সাহায্য করে।
- ৮ মাসের বাচ্চার খিচুড়ি রেসিপি এটিতে বরবটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে।বরবটি শিশুর দেহে আয়রনের ঘাটতি কমাতে সাহায্য করে, ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে,এছাড়াও শিশুর দেহের হাড়ের ঘনত্ব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে, দেহের চর্বি হ্রাস করতে সহায়তা করে।
- উক্ত রেসিপিতে ব্যবহৃত পানি শিশুর দেহে পানির ঘাটতি পূরন করতে সহায়তা করবে।
- বিস্তারিত বলতে গেলে, মুরগির মাংস একটি উত্তম পোষণ সম্পন্ন খাবার হতে পারে, যা শিশুর উত্তন্ন শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটি প্রোটিনের উৎস হিসেবে কাজ করে, যা শিশুর শারীরিক মানসিক উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয়।
- মুরগির মাংস ভিটামিন B গ্রুপের বিভিন্ন প্রকার ভিটামিন সরবরাহ করে, যা শিশুর নার্ভ সিস্টেম, হাড় বৃদ্ধির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, মুরগির মাংস আয়রন, জিংক এবং ফসফরাস উপাদান সরবরাহ করে, যা শিশুর শারীরিক উন্নতি ও সঠিক ডেভেলপমেন্টে সাহায্য করে।
- তবে, শিশুর খাবারে মুরগির মাংস যোগ করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে ভুলবেন না। সঠিক পরিমাণ এবং সঠিক সময়ে পুষ্টি উপাদানের সেবন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
এই রান্না খাওয়ার অপকারিতা
এই খিচুড়িতে অতিরিক্ত মসলা ব্যবহার করলে শিশুর দেহে ক্ষতিকর প্রভাব সৃষ্টি হবে।